কুমিরা ঘাট |
★চট্টগ্রাম থেকে সন্দীপ আসা-যাওয়ার জন্য কুমিরার বিশাল এই ঘাট ব্যবহার করা হয়। এই ঘাটে যাত্রীদের যাতায়তের জন্য প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই জেটি স্থানীয় মানুষের কাছে,কুমিরা ঘাট,কুমিরা- সন্দ্বীপ ফেরীঘাট ব্রীজ, কুমিরা ব্রীজ ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
কুমিরা ঘাট কোথায় অবস্থিত
কুমিরা ঘাট বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের থেকে ১.৩ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
কুমিরা ঘাট কখন যাবেন
বিকালে কুমিরা ঘাট যাওয়ার সব থেকে আদর্শ সময়। সন্ধ্যায় শীপ ইয়ার্ডের সোডিয়াম লাইটগুলো জ্বলে উঠে। তখন এই ঘাটের সৌন্দর্য অন্যরকম লাগে।
কুমিরা ঘাট কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসেঃ
কুমিরা ঘাট যেতে হলে প্রথমেই আসতে হবে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড। বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাস যায় চট্টগ্রাম। যে কোনো একটায় উঠে সীতাকুণ্ডের কুমিরায় নেমে যাবেন। তবে সুপারভাইজারকে আগে থেকে বলে রাখবেন আপনি সীতাকুণ্ডের কুমিরা নামবেন।
ট্রেনেঃ
দেশের যেকোন জায়গা থেকে চট্টগ্রাম গামী যেকোন ট্রেনে উঠে গেলে।কুমিরা রেলস্টেশনে নেমে যেতে পারবেন।সব ট্রেন আবার কুমিরায় থামে না।তাই জেনে নিবেন কোন কোন ট্রেন কুমিরায় থামে।
চট্টগ্রাম থেকেঃ
চট্টগ্রাম থেকেও আসতে পারেন কুমিরা ঘাটঘর। চট্টগ্রামের অলংকার মোড়, এ কে খান মোড়, কদমতলী থেকে ফেনী গামী বাসে আসতে পারেন কুমিরা ঘাটঘর। ভাড়া ৫০-১০০ টাকার মতো।
ঘাটে কিভাবে যাবেনঃ
কুমিরা বাজারে নেমে ঘাটে আসার জন্য লোকাল অটোরিকশা বা সিএনজি পেয়ে যাবেন।এতে করে চলে আসুন ভাড়া ১০-১৫ টাকা।
কুমিরা ঘাটে কি করতে পারেন
কুমিরা ঘাটে গিয়ে ঘুরাঘুরি করতে পারেন।তবে ঘাটের শেষ মাথায় পৌঁছালে মনে হবে যেন সমুদ্রের ভিতরে আছেন। এখান থেকে বিশাল বিশাল জাহাজ দেখা যায়। আরো দেখতে পারবেন যাত্রীদের আসা- যাওয়া, জেলেদের মাছ ধরা শেষে ঘাটে ফেরা, শীপ ইয়ার্ড শ্রমিকদের কর্ম তৎপরতা ইত্যাদি। এছাড়াও বরশি দিয়ে মাছ ধরতে পারেন।বোট ভাড়া করে সমুদ্রের আরো মাঝে যেতে পারেন। তখন জাহাজ গুলোকে আরো কাছ থেকে দেখা যায়।তবে এখানের সূর্যাস্ত না দেখে আসার অনুরোধ রইলো।এখানের আসল সৌন্দর্যই হলো সূর্যাস্তের সময়ে।
কোথায় খাবেন
কুমিরা ঘাট এলাকায় খাবারের জন্য তেমন ব্যবস্থা নাই। তবে কিছু ছোট খাটো ভাতের হোটেল আছে। যেখানে ভাত, মাংস, মাছ, ভর্তা ভাজি দিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া চাইলে সীতাকুন্ড এসে খেতে পারেন। সীতাকুন্ডে মোটামোটি মানের কিছু রেস্টুরেন্ট আছে। পছন্দমতো যেকোন একটায় খেতে পারেন। অথবা চট্টগ্রাম এসেও খেতে পারেন। চট্টগ্রামে সব ধরণের রেস্টুরেন্ট আছে।
কোথায় থাকবেন
কুমিরা ঘাটে থাকার জন্য তেমন ভালো কোন হোটেল নেই।তবে থ্রি ষ্টার নামে একটা হোটেল আছে। এখানে থাকতে পারেন। তবে তার আগে রুম দেখে নিবেন। এছাড়া সীতাকুণ্ডে এসে থাকতে পারেন। সীতাকুন্ডে মোটামোটি মানের বেশ কিছু হোটেল আছে।পছন্দমতো যেকোন একটায় থাকতে পারেন। অথবা চট্টগ্রাম এসেও থাকতে পারেন। চট্টগ্রামে সব ধরণের হোটেল আছে।
ভ্রমণের সাধারন কিছু টিপস অ্যান্ড ট্রিকসঃ
সবকিছুর ব্যাপারে পজিটিভ থাকুন; পজিটিভ ভাবুন সাথে কি কি নেয়া প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
ভ্রমণের স্থানের স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যান।
ক্যামেরার জন্য এক্সট্রা ব্যাটারী নিতে ভুলবেন না
শীতকালে ভ্রমণ করলে যথেষ্ট পরিমান গরম কাপড় নিন
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি সাথে রাখুন কি কি জামাকাপড় পরবেন আগে থেকেই ঠিক করে নিন।
• টুথব্রাস, মুজা এবং অতিরিক্ত অন্তর্বাস সাথে রাখুন
• যে কোনো বাহনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে দামাদামি করে নিবেন। • ভ্রমণে বেশি বেশি পানি পান করুন যাতে ডিহাইড্রেট হয়ে না যান।
• কোন পথ বা ডিরেকশন সম্পর্কে জানতে যাকে তাকে জিজ্ঞেস না করে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করুন
• আপনার ভ্রমণ প্ল্যান সম্পর্কে অবশ্যই আপনার বাসার কাউকে অবহিত করে যান। • সম্ভব হলে একটি ফার্স্ট এইড কিট সাথে রাখুন
শেষ কথাঃ
কিছু খেয়ে প্লাস্টিক সব জায়গায় ফেলবেন না।প্রকৃতির সৌন্দর্য নষ্ট করবেন না।আমাদের সম্পদ আমাদেরকেই বাচাতে হবে।
ভালো থাকবেন আবার দেশের অন্য কোন পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে আসবো।
কোন ধরনের ভুল হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন
সীতাকুণ্ডের কিছু দর্শনীয় স্থান
সীতাকুণ্ডে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। সব গুলো মোটামোটি কাছাকাছি হওয়াতে এক দিনে বেশ কয়েকটা কভার করা যায়। তবে এক রাত দুই দিন সময় নিয়ে আসলে প্রায় সব গুলো কভার করতে পারবেন। আপনার সময় বিবেচনা করে ট্যুর প্ল্যান সেভাবেই করবেন। সীতাকুণ্ডের জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট গুলো হলো: